রেইনবো হাসপাতালের বিরুদ্ধে “১৯৯ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি” শিরোনামে খবরে বিভ্রান্তি—প্রতিবাদে বগুড়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

গত ৩ জুন একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত “গ্রাহকদের ২০০ কোটি টাকা নিয়ে রেইনবো হাসপাতালে এমসিএস’র চেয়ারম্যান লাপাত্তা” শিরোনামের প্রতিবাদে বুধবার বগুড়া প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছেন রেইনবো কমিউনিটি হাসপাতালের পরিচালকরা।
সম্মেলনে হাসপাতালের পরিচালক এটিএম গাউছুল আজম (রুবেল) লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জানান, ওই খবরে যেসব প্রতিষ্ঠানকে একসূত্রে জড়িয়ে হাসপাতালের নাম ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোর সাথে হাসপাতালের কোনো আর্থিক-প্রশাসনিক সম্পৃক্ততা নেই। বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলো হল—রেইনবো হোমস, রেইনবো মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি, রেইনবো ই-কমার্স ও রেইনবো কৃষি উন্নয়ন সংস্থা; এগুলোর পরিচালনা ও গ্রাহক অর্থ ব্যবস্থাপনা দেখভাল করেন প্রতিষ্ঠাতা মো. আমিরুজ্জামান পিন্টু। তিনি রেইনবো কমিউনিটি হাসপাতালের কেবল একজন পরিচালক, হাসপাতালের মালিক বা প্রশাসনিক প্রধান নন।
“রেইনবো কমিউনিটি হাসপাতাল স্বতন্ত্র হিসাবে রোগীসেবা দিয়ে থাকে। আমরা কোনো গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত নেইনি, অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের দায়-দেনার সাথেও যুক্ত নই,”—বক্তব্যে বলেন পরিচালক গাউছুল আজম।
অপর পরিচালক মো. কামরুল হাসান বলেন, “প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংকটে পড়া গ্রাহকেরা টাকা চাইতে এসে হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করলেও হাসপাতাল তাদের পাওনার পক্ষ বা প্রতিপক্ষ কোনোটা ই না।”
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম ও হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কেন বিতর্ক?
লিখিত বিবরণ অনুযায়ী, আমিরুজ্জামান পিন্টু ১৫ বছর আগে উল্লেখিত চার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং সেখান থেকে “অমানত” হিসেবে গ্রাহকের টাকা সংগ্রহ করেন; শুরুতে নিয়মিত মুনাফা দিলেও এক-দেড় বছর ধরে মূলধন-মুনাফা ফেরত দিতে বিলম্ব হচ্ছিল। তিনি ২ জুন গ্রাহকদের নিকট পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। সেদিন তাঁকে অফিসে না পেয়ে কয়েকজন গ্রাহক তাঁর বাসায় এবং পরে হাসপাতালের সামনে গিয়ে জমায়েত হন। দৈনিক করতোয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে হাসপাতালে “২০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির” দায় আর চেয়ারম্যানের লাপাত্তা হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়—যা রেইনবো কমিউনিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ “একপেশে ও তথ্যভিত্তিহীন” বলে আখ্যায়িত করেছে।
হাসপাতালের মালিকানা-ভাড়া সম্পর্ক
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ভবনটির মালিক রেইনবো হোমস প্রা. লিমিটেড—এ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে রেইনবো কমিউনিটি হাসপাতাল পরিচালিত হয়। হাসপাতালে ক্ষুদ্র শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালকরা নিজস্ব তহবিলেই ব্যয় চালান; এতে আমানতের টাকা যুক্ত নেই।
আইনি ব্যবস্থা ভাবনায়
প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিচালকরা জানান, বিভ্রান্তিকর খবরের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হবে এবং ভবিষ্যতে এমন তথ্যভ্রান্ত সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ জানানো হবে। পাশাপাশি, যাঁরা পিন্টুর প্রতিষ্ঠানে অর্থ রেখেছিলেন, তাঁদের পাওনা নিয়ে যে বৈধ প্রক্রিয়া চলমান, তা হাসপাতালের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে আশ্বস্ত করেন তাঁরা।