ঈদের প্রস্তুতিতে জমজমাট গোবিন্দগঞ্জের কামারপল্লী, ব্যস্ত সময় পার করছেন লোহা গলানো কারিগররা

আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারপল্লীগুলোতে বইছে ব্যস্ততার হাওয়া। কোরবানির ঈদে পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় চাপাতি, ছুরি, বঁটি ও দা তৈরিতে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করছেন কামাররা। বাজারে বেড়েছে এসব অস্ত্রের চাহিদা, সেই সাথে বেড়েছে কয়লা ও কাঁচামালের দামও।
কামারপল্লীতে ঈদের আমেজ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কামারদের দোকানে ভিড় করছেন কোরবানিদাতা ও সাধারণ ক্রেতারা। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে অনেকেই ছুরি, বঁটি ও চাপাতি কিনে রাখছেন। ক্রমেই ব্যস্ত হয়ে উঠছে কামারদের কর্মঘণ্টা—সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে হাতুড়ির ঠকঠক শব্দ।
স্থানীয় কামার শিল্পী রমজান আলী বলেন, “ঈদ এলেই কাজের চাপ বেড়ে যায়। এবারও তাই হয়েছে। সকাল-বিকেল ছাড়াও রাতেও আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। চাপাতি, ছুরি, দা তৈরি করতে খুবই সতর্কতা ও পরিশ্রমের দরকার হয়।”
চাহিদা বাড়ার সাথে দামও বেড়েছে
চাহিদার পাশাপাশি বেড়েছে কাঁচামাল ও কয়লার দাম। ফলে বাধ্য হয়ে কামাররা ধারালো অস্ত্রের দামও কিছুটা বাড়িয়েছেন।
এক কামার কারিগর জানান, “গতবার ২৫০ টাকায় যে চাপাতি বিক্রি করেছি, এবার সেটাই ৩৫০ টাকায় দিতে হচ্ছে। কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। আর লোহার দামও আগের চেয়ে বেশি।”
ঈদের আগের দিন চলে বেচাকেনা গভীর রাত পর্যন্ত
ঈদের আগের দিন রাত পর্যন্ত চলে কামারপল্লীতে কেনাবেচা। অনেকেই শেষ সময়ে আসেন ছুরি বা চাপাতি কিনতে কিংবা পুরনো দা-বঁটি শান দিতে। এতে কামারদের আয় কিছুটা বাড়লেও অতিরিক্ত কাজের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় তাদের।
ঐতিহ্যবাহী শিল্প টিকিয়ে রাখতে চান কামাররা
এক সময় গ্রামবাংলায় কামারশিল্প ছিল অত্যন্ত সম্মানজনক ও প্রয়োজনীয় পেশা। সময়ের বিবর্তনে এ পেশায় আগ্রহ কমে গেলেও ঈদুল আজহার সময় সেই পুরনো চিত্র যেন কিছুটা ফিরে আসে।
গোবিন্দগঞ্জের এক প্রবীণ কামার বলেন, “পুরো বছর কাজ না থাকলেও এই ঈদের মৌসুমে একটু ভালো রোজগার হয়। আমরা চাই সরকার যেন এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করে।”