
নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি বলেছেন, বাংলা ভাষার প্রতি গভীর ভালবাসা ও শ্রদ্ধা ছিল বঙ্গবন্ধুর। তিনি বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন নিয়ে বাংলা ভাষার সুরক্ষা ও উন্নয়নের প্রবক্তা ছিলেন।
সোমবার (২২ মার্চ) রাজধানীর প্যারেড স্কয়ারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার ষষ্ঠ দিনের অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ দিনের অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য ছিল ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’।
বিদ্যা দেবী বলেন, একজন অসামান্য বক্তা, সংগঠক ও যোদ্ধা হিসেবে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষের মন জয় এবং একটি নতুন জাতি গঠনের লক্ষ্য অর্জন করেছিলেন। তিনি এই অঞ্চলের একজন শ্রদ্ধেয় নেতা।
তিনি বলেন, দুর্বল, নিপীড়িত, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মহানুভবতার কথাও আমরা জানতে পেরেছি। তার নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামের ফলে বাংলাদেশের জন্ম হয়। এই নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৯ সালে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করে। গোটা বাংলাদেশ এটি গ্রহণ করে।
নেপালের রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, অবদান ত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে সারাদেশে তার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপিত হতে দেখে আজ আমরা আনন্দিত।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণ বয়স থেকে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রপথিক। তিনি ছিলেন ক্যারিসম্যাটিক নেতা, সুসংগঠক এবং সাহসী ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঞ্চালনায় এতে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। এছাড়া বাংলাদেশের ফার্স্ট লেডি রাশিদা হামিদ, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, নেপালের রাষ্ট্রপ্রতির কন্যা উষা কিরণ ভান্ডারিসহ পাঁচশজন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব আলোচনা অনুষ্ঠান বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত চলে। এরপর সন্ধ্যা ৬টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৩০ মিনিটের বিরতি ছিল। দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে শত শিল্পীর যন্ত্রসংগীত, বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে বন্ধু রাষ্ট্র নেপালের পরিবেশনা, হাজার বছর ধরে (নৃত্যালেখ্য: কবিতা, গান ও নৃত্য), বাংলার ষড়ঋতু (৬০ জন শিল্পীর নৃত্য পরিবেশনা), ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশাত্মবোধক গানের মেডলি: সেই থেকে শুরু দিন বদলের পালা (কোরিওগ্রাফি), ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবেশনা ‘বাংলার বর্ণিল সংস্কৃতি’, যাত্রাপালা ‘মা মাটি মানুষ’, শত বাউলের গানের মেডলি ও নৃত্যালেখ্য: ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রিয় গান ও বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত গান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
দৈনিক চাঁদনী বাজার সাজ্জাদ হোসাইন