আগস্টের অশ্রু, বয়ে যায় নয়নে নয়নে | Daily Chandni Bazar আগস্টের অশ্রু, বয়ে যায় নয়নে নয়নে | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১ আগস্ট, ২০২১ ০৯:২১
আগস্টের অশ্রু, বয়ে যায় নয়নে নয়নে
অনলাইন ডেস্ক

আগস্টের অশ্রু, বয়ে যায় নয়নে নয়নে

আগস্ট। বাঙালির জীবনে এক অভিশপ্ত সময়। এই মাসে সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশে যে নৃশংসতা-বর্বরতা ঘটেছে, তা আর প্রত্যক্ষ করেনি মানবসভ্যতা। পিতা হারানোর কান্নার অশ্রু হয়তো শুকিয়ে গেছে কোনোকালে, কিন্তু হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আজও বহমান। সেই ক্ষরণে যে দহন বাঙালির ধমনিতে, তা যে মিটবার নয়।

বাঙালির আকাশে সেই যে আঁধার নামল, তা আজও ঘোচেনি। স্বাধীনতার পাঁচ দশকের বাংলাদেশ, জাতি এগিয়েছে বহুদূর। এগিয়েছে বিশ্ব সভ্যতাও। কিন্তু বাঙালির পূব আকাশে যে সূর্য উদিত হওয়ার ঊষালগ্নেই অস্ত গেল, তা আজও অমানিশার ঘোরে আটকা। পিতাকে হারিয়ে জাতি আজও হাতড়ে বেড়ায় সঙ্কটের প্রতিক্ষণে।

বাঙালির ইতিহাসে বিদ্রোহের আগুন জ্বলেছে হাজার বছর ধরে। আর হাজার বছরের বিদ্রোহের আগুনের সন্নিবেশ ঘটিয়ে জন্মেছিলেন টুঙ্গীপাড়ার সেই ছেলেটি। যার জন্মদিবসে ধরণীতে সূর্য ছড়িয়েছিল মুক্তির আভা। যার জন্ম মানেই শোষিতের জয়গান আর শোষকের প্রস্থান।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে নামের বন্দনা কোনো সীমারেখায় আটকে রাখা যায় না। তিনি জন্মেছিলেন বাঙালির মুক্তির তাগিদেই। তবে শুধু জাতিসত্তার প্রশ্নেই নয়, তিনি এসেছিলেন মানবমুক্তির কেতন উড়িয়ে।

বঙ্গবন্ধু মানেই বাঙালি, বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু মানেই বঞ্চিত মানুষের মুক্তির ঠিকানা। অথচ মানবতার সেই মুক্তির দূতকেই হারতে হয়েছে স্বজাতির কাছে।

১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সাল। রক্তাক্ত এক অভিশপ্ত দিবসের হলিখেলা যেন। যুদ্ধবিধস্ত একটি দেশকে যখন আলোর নিশানা দেখিয়ে এগিয়ে নিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু, ঠিক তখনই ‘আগস্ট’ নামের অন্ধকার নেমে আসে। আগস্টের এ দিনে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা হত্যা করে স্বাধীন রাষ্ট্রের জনক শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের। কেবল তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেই সময় দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান।

ঘাতকের বুলেট নিভে দিয়েছে ‘স্বাধীনতার সূর্য’ বঙ্গবন্ধু নামের প্রদীপ। এখানে সূর্য ওঠে রোজ। নতুনের কেতন উড়িয়ে মানুষ স্বপ্ন জয়ের প্রত্যয়ে এগিয়েও চলে নিত্যদিন। তবু সে স্বপ্নে অপূর্ণতা রয়ে যায়। সে অপূর্ণতা যেন শুধুই স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধুকে হারানোর। তাই যেন আগস্টের অশ্রু বয়ে যায় নয়নে নয়নে।

.দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন