
বগুড়ার সোনাতলায় যমুনা নদীতে পানি কমার সাথে সাথে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে নদী পারের মানুষের মাঝে ভাঙন আতংক দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু কিছু স্থানে জিওব্যাগ ফেললেও নদী ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।
গতকাল শুক্রবার উপজেলার পাকুল্যা ইউনিয়নের মির্জাপুর, পূর্ব সুজাইতপুর, রাধাকান্তপুর, আমতলী, মুশারপাড়া, আউচারপাড়া, মহব্বতের পাড়া, জন্তিয়ারপাড়া, সরলিয়া, পূর্ব তেকানী, চুকাইনগর এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিগত ১৭/১৮ বছর যাবৎ যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে গেছে ওই এলাকাগুলোর একাংশ। এমনকি আউচারপাড়া ও তার আশপাশের এলাকার প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়াও হাট—বাজার স্থানান্তর করা হয়েছে। যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে নদী ভাঙন আতংক কাজ করছে। দিনের বেলায় ওই এলাকার লোকজনের সময় কাটলেও রাতে তাদের সময় কাটে টেনশনে। কখন যেন, শয়ন ঘরটি ও তারা যমুনা নদীতে ছেলে—মেয়ে সহ ডুবে মারা যায়। এছাড়াও কিছু কিছু এলাকায় শয়ন ঘরের পাশাপাশি গবাদি পশু রাখার ঘরগুলোর
কাছে নদীর তীর পৌছে গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ যমুনা নদী খনন না করায় নদীর গভীরতা হ্রাস পেয়েছে। যার ফলে প্রতি বছর বন্যার সময় এবং বন্যা পরবর্তী নদী অব্যাহত ভাঙনে শত শত একর আবাদি জমি, গাছপালা, বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ (পানি উন্নয়ন বোর্ড) নদী ভাঙন রোধে শুষ্ক মৌসুমে কোন ভূমিকা না নিলেও বর্ষা মৌসুমে এসেও নামে মাত্র জিওব্যাগ ও বাঁশ পাইলিং করে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে মাত্র।
এ বিষয়ে মির্জাপুর এলাকার জয়নাল আবেদীন, সম্পা বেগম, বাহার উদ্দিন, সোনা মিয়া, মিনারুল ইসলাম বলেন, গত ১৭/১৮ বছর ধরে যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে নদীর তীর এখন ঘরের সামনে এসে পৌছেছে। রাতে দু’চোখে ঘুম আসে না। কখন যেন স্ত্রী—ছেলে—মেয়ে সহ শয়ন ঘরটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তারা আরও জানান, গত কয়েকদিন পূর্বে নদীর অব্যাহত ভাঙনে ওই এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ নিঘুর্ম রাত কাটায়। মির্জাপুর সহ বেশ কিছু এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেললেও তা অপ্রতুল।
স্থানীয় লোকজন আরও জানান, এখনই বিপুল পরিমান জিওব্যাগ ফেললে নদী ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। এছাড়াও তারা আরও জানান, নদীর অব্যাহত ভাঙনে ৩/৪ বার বসত বাড়ি স্থানান্তর করতে হয়েছে। কেউ কেউ অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছে। তারা আক্ষেপ করে বলেন, নদীর ভাঙনে বাপ—দাদার কবর টুকুও বিলীন হয়ে গেছে।