
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ঐতিহাসিক সান্তাহার রেলওয়ে হাসপাতালটি চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় জনবল সংকটে বেহাল অবস্থায় পতিত হয়েছে। ১৯১৭ সালে ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালটি বর্তমানে একজন ফার্মাসিস্টের ওপর নির্ভর করে আউটডোর সেবা চালাচ্ছে। ফলে স্বাস্থ্যসেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
হাসপাতালের দুরবস্থা চরমে
সান্তাহার রেলওয়ে হাসপাতালের অনুমোদিত ৭৫টি পদে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২৫ জন। চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২টি, কিন্তু বর্তমানে কেউ নেই। নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ড্রেসার, কম্পিউটার অপারেটর, জামাদার, খালাসী—প্রায় সব পদে জনবল ঘাটতি। ইনডোর সেবা বন্ধ, শয্যা সংখ্যা কমে এসেছে, পরীক্ষাগার নেই, অ্যাম্বুলেন্স নেই, পর্যাপ্ত ওষুধ নেই।
হাসপাতালের ইনডোর সিস্টার ইনচার্জ, বাবুর্চি ও মেডিসিন ক্যারিয়ার পদেও সংকট রয়েছে। হরিজন সম্প্রদায়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা মূলত রেলস্টেশনের দায়িত্বে থাকেন। ফলে হাসপাতালের পরিবেশও রীতিমতো ভুতুড়ে হয়ে উঠেছে।
রেল মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও সরকারি উদ্যোগ
রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সারাদেশের ১০টি রেলওয়ে হাসপাতালকে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি (MoU) হয়েছে। উন্নয়ন কার্যক্রম শেষে সাধারণ নাগরিকরাও রেলওয়ে হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। ইতোমধ্যে অবকাঠামো ও সেবার মানোন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য
হাসপাতালের অফিস সহকারী আব্দুস সবুর জানান, "একজন ফার্মাসিস্ট দিয়েই প্রতিদিন ৩০-৪০ জন রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। চিকিৎসকের অনুপস্থিতি সেবার বড় অন্তরায়।"
পাকশি রেলওয়ে বিভাগের মেডিকেল অফিসার (ডিএমও) ডা. আনিসুল হক বলেন, “জনবল সংকট রয়েছে, তবে শিগগিরই পদায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, "সরকার সুষম স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চায়। এজন্য রেলওয়ে হাসপাতালগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় এনে আধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।"