
শিবগঞ্জ, বগুড়া: শিবগঞ্জে তীব্র দাবদাহের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গরমের তীব্রতায় একটুকু স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বিক্রি হওয়া তালের শাঁস খেতে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। বর্তমানে একটি তালের দাম ৫ টাকা থেকে শুরু করে, মানভেদে ২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
তালের শাঁস দেহকে ক্লান্তিহীন রাখে। এতে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে, দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে এবং মুখের রুচিও বাড়ায়। তালের শাঁসে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সি-সহ নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা স্থানীয়ভাবে এগুলো সংগ্রহ করার পাশাপাশি দেশের নানা জায়গা থেকে তালের শাঁস আমদানি করেও বিক্রি করছেন। তবে, বিগত বছরের তুলনায় এবছর তালের দাম কিছুটা বেশি।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থান, যেমন পৌরসভা, শিবগঞ্জ হাট, গুজিয়া, আমতলি, কিচক, হরিপুর, মোকামতলাসহ অন্যান্য এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে যে, রাস্তার মোড়ে তালের শাঁসের ভ্রাম্যমাণ দোকান নিয়ে বসেছেন মৌসুমি ফল বিক্রেতারা।
এসব দোকানে ছোট-বড় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তালের শাঁস কিনতে ভিড় করছেন।
পৌর সদরের বিক্রেতা হারেজ উদ্দিন বলেন, “একটি তালে দুটি অথবা তিনটি শাঁস থাকে। কেউ তরল, কেউ একটু শক্ত শাঁস পছন্দ করে। আমি প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ তাল বিক্রি করি।”
আমতলি বন্দরের বিক্রেতা সুমন বলেন, “শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবার কাছে তালের শাঁস প্রিয়। আবার মৌসুমি ফল বলে অনেকে শখের বশেই এটি কিনে খায়।”
তালের শাঁস কিনতে আসা পৌর এলাকার মিরেরচক গ্রামের আইয়ুব আলী জানান, “গরমে একটু স্বস্তি পাওয়ার আশায় তাল শাঁস কিনতে এসেছি। কচি তালের শাঁস খেতে খুবই সুস্বাদু। সবচেয়ে বড় কথা হলো এটা একেবারেই ভেজাল মুক্ত একটি ফল, সাথে পুষ্টিগুণও রয়েছে।”
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শাহ মোঃ আপেল মাহমুদ জানান, "তাল একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। তাল গাছ ভূমিক্ষয় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। উপজেলায় প্রতিবছর তালের আটি রোপণ করা হয় এবং এর ফলন বাড়াতে কৃষি বিভাগ নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।"