শিশুসহ ভারতীয় নারীর হাইকোর্টে হাজিরা আজ

রাজধানীতে স্বামীর বাড়িতে বসবাসকারী ভারতীয় এক নারীকে তার দুই বছরের শিশুসন্তানসহ হাইকোর্টে সশরীরে হাজির হওয়ার তারিখ ধার্য রয়েছে আজ।
সেই নারীর হাজিরার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার বলেন, ‘আদালত দুই শিশুসহ নারীকে হাজির করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। আজ হাজির হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত আমার কাছে কোনো তথ্য আসেনি। ওই নারী আজ আদালতে উপস্থিত হলে শুনানি ও প্রডিউস করা হবে।’
এ বিষয়ে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ‘ওই নারীকে আদালতে হাজির করতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সে হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আদালতে হাজির করবেন। আমরা এখনও জানি না, উনাকে তারা নিয়ে এসেছেন কি না।’
এর আগে রাজধানীতে স্বামীর বাড়িতে বসবাসকারী ভারতীয় ওই নারীকে তার দুই বছরের শিশু সন্তানসহ আদালতে সশরীরে হাজির করতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) গত ৯ আগস্ট নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের একই ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ওই দিন আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া।
ওইদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
শুনানি শেষে অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া বলেন, ‘ভারতের বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইট থেকে হায়দরাবাদের সাদিকা শেখ নামে এক নারীকে পছন্দ করেন বারিধারার এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান। মেয়েটিও হায়দরাবাদের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। ২০১৭ সালে হায়দরাবাদে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন ওই দম্পতি।’
‘এরই মধ্যে ওই দম্পতির কোলজুড়ে আসে এক পুত্রসন্তান। তবে সুখের সংসারে তাদের একপর্যায়ে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকাকে মারধরও করেন তার স্বামী। ভারতের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয়স্বজনরা জানতে পারেন। এরপর ওই দেশ থেকে তাদের পরিবারের পক্ষে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও কোনো সমাধান না হওয়ায় পরে মেয়েটির বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান।’
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ আগস্ট সাদিকা শেখ ও তার শিশুসন্তানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরী। আজ সেই রিট শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন