বগুড়ায় এতিমদের সম্পত্তি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন, আদালতের আদেশ সত্ত্বেও হুমকি-ধমকির অভিযোগ

বগুড়ার আদমদীঘির তালশন এলাকার এক নারী সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন, তার পিতা ও চাচার হেবা দলিলে এতিম সন্তানদের নামে রেজিস্ট্রি করা সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে একটি প্রভাবশালী মহল। মামলার পর আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত দুইজনের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হলেও, তারা জামিনে মুক্ত হয়ে এখন মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজ (৫ জুলাই) বগুড়া প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জান্নাতুল নাঈম লিখিত বক্তব্যে জানান, তার পিতা মৃত জইম উদ্দীন মৃত্যুর আগে সান্তাহার পৌরসভার ১ নম্বর রেলগেটের পূর্ব পাশে অবস্থিত একটি বাড়ি ও দোকান (জায়েদা প্লাজা) হেবা দলিলের মাধ্যমে চার কন্যা এবং তার চাচা মো. ফেরদৌস আলম তার স্ত্রী মর্জিনা বেগমের নামে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দেন।
তিনি আরও বলেন, ওই ভবনের নিচতলায় দোকান, গোডাউন ও উপরতলায় ফ্ল্যাট থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল্লাহেল কাফি, নাসিফ আরেফিন নিবির, মো. জামিল হোসেন এবং মো. হালিম হোসেন—এই চারজন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে বসবাস ও ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। তারা কোনো দলিলপত্র না থাকা সত্ত্বেও জায়গাটি দখলে রেখেছেন।
ভুক্তভোগীর দাবি, এই সম্পত্তি মৃত জইম উদ্দীন ও ফেরদৌস আলমসহ ছয় ভাইয়ের যৌথ খরচে নির্মিত এবং হেবা দলিলের মাধ্যমে বৈধভাবে এতিম সন্তানের নামে নিবন্ধনকৃত। কিন্তু ভূমিদস্যুরা সেটি দখল করে রেখেছে।
এই ঘটনায় তিনি ১০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে বগুড়ার আমলী আদালতে ভূমি প্রতিরোধ আইন ২০২৩ এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে (মামলা নং সি.আর. ১৭২/২০২৫) একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার শুনানিতে ২৭ জুন আদালত দুই অভিযুক্ত আব্দুল্লাহেল কাফি ও নাসিফ আরেফিন নিবির-এর জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তবে সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে তারা মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য জান্নাতুল নাঈম ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করে বলেন, “আমাদের এবং এতিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দখলদারদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা জানান, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কেউ যদি এতিমদের সম্পত্তি দখলে রাখে, তবে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?