প্রকাশিত : ১৬ জুন, ২০২৫ ১৯:৩৫

বগুড়ায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে আইনী নোটিশ দিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা

ষ্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে আইনী নোটিশ দিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা
বগুড়ার ওয়ান ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকার সাংবাদিক ফয়সাল হোসাইন সনিকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশককেও আইনজীবীর মাধ্যমে নোটিশ দেয়া হয়েছে। বেসরকারি ওয়ান ব্যাংক পিএলসি বগুড়া শাখার ম্যানেজার (অপারেশন) মাহবুব উল আলমের পক্ষে গত ৪ জুন বগুড়া জজ কোর্টের আইনজীবী বিজন কুমার সাহা স্বাক্ষরিত নোটিশে সংবাদের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে পুনরায় সংবাদ প্রকাশ না করলে আদালতে মামলা করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। জানা যায়, কয়েকজন ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে গত ১ জুন দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকায় 'ব্যাংক কর্মকর্তা করেন সুদের ব্যবসা, ভুক্তভোগীকে প্রাণনাশের অভিযোগ' শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। অভিযোগকারী এবং সেই ব্যাংক কর্মকর্তার মন্তব্য নিয়ে যথাযথ নিয়ম মেনে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল মর্মে দাবি করেন সাংবাদিক ফয়সাল হোসাইন সনি। সূত্র জানায়, এই বছরের ১৯ মার্চ ওয়ান ব্যাংক কর্মকর্তা মাহবুব উল আলমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়ার নির্বাহী পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন বগুড়া বিসিক শিল্প নগরীর উত্তরা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠানের চারজন শিল্প উদ্যোক্তা। তারা হলেন- আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, সাহিদুর রহমান, নাহিদ হাসান ও মতিউর রহমান। তাদের অভিযোগ কয়েকজন পার্টনার মিলে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ব্যাংক কর্মকর্তার কথামতো ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে টাকার জায়গা ফাঁকা রেখে স্বাক্ষরকৃত চেক জমা দিয়ে মাহবুব উল আলমের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তার থেকেই উচ্চসুদে ঋণ নিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে বিভিন্ন সময়ে ধাপে ধাপে ২৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে সুদে আসলে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা প্রদান করলেও সেখানে সুদের আরো প্রায় ৭ লাখ টাকা বকেয়া থেকে যায়। যা নিয়ে ভুক্তভোগীকে ব্যাংক কর্মকর্তা মাহবুব উল আলম প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছেন মর্মে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। যদিও এ ব্যাপারে বগুড়ার ওয়ান ব্যাংক কর্মকর্তা মাহবুব উল আলম বলছেন উল্টো কথা। তিনি জানান, জমি কিনে দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে আব্দুল জলিল ভূইয়া ১০ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাতের চেষ্টা করেন। দফায় দফায় বলার পর তিন লাখ টাকা পরিশোধ করেন। বাকি সাত লাখ টাকার চেক হাতে ধরিয়ে দেন। কিন্তু পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে যাচাই ছাড়াই সত্য ঘটনা আড়াল করে তাকে দাদন ব্যবসায়ী উল্লেখসহ সম্মানহানি ও মিথ্যাচার করা হয়েছে। আর আইনী নোটিশ পাওয়া সাংবাদিক ফয়সাল হোসাইন সনি বলেন, তিনি পেশাগত নীতিমালা মেনেই প্রতিবেদন করেছেন। অভিযোগ যেহেতু লিখিত ছিল এবং উভয় পক্ষের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে সেখানে তার দ্বারা কারও সম্মানহানির প্রশ্নই ওঠে না। এখন লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে, যা তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন, এটি একটি স্বাধীন সাংবাদিকের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টা। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সচেতন মহলের কাছে তদন্তপূর্বক এই ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।
উপরে