প্রকাশিত : ২ জুলাই, ২০২৫ ০০:৫১

বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাণীনগরের তারিকুল ইসলাম

উপজেলা সংবাদদাতা, রাণীনগর, নওগাঁঃ
বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাণীনগরের তারিকুল ইসলাম
তরিকুল ইসলাম (তাজ)। ছবি- সংবাদদাতা

চীনের বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী মো. তারিকুল ইসলাম (তাজ)। নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার সন্তান তারিকুল ইসলাম এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে অসামান্য অবদানের জন্য এই সম্মাননা অর্জন করেন।

চীনের বেইজিংয়ের হাইডিয়ান জেলার সুয়েইউয়ান লু-তে অবস্থিত বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাসে গত সোমবার দুপুর ২:৩০ টায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ঝাও ওয়েই শেং তারিকুল ইসলামকে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-পরিচালক প্রফেসর ঝাং ঝিহুই, আন্তর্জাতিক স্কুলের উপ-ডিন প্রফেসর উ সিয়াওজুন, এবং প্রফেসর সু ইউয়ান মিংসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

গুরু-শিষ্যের একসাথে বাজিমাত
এদিন একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, তারিকুল ইসলাম সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার কারণে তার মেইন সুপারভাইজার প্রফেসর সু ইউয়ান মিংও সেরা শিক্ষক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এর মানে, গুরু ও শিষ্য একসাথে এই সম্মাননা অর্জন করেছেন।

তারিকুল ইসলাম এর আগে চীনের হুনান প্রদেশের চাংশা ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মক্যোনিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক সম্মান কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেছিলেন এবং সেখানেও তিনি সেরা গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।

গবেষণা ও বর্তমান কর্মস্থল
তার গবেষণার প্রধান বিষয় ছিল বিমানের নকশা, মনুষ্যবিহীন আকাশযান, বৈদ্যুতিক উল্লম্ব অবতরণ যান, এরোডাইনামিক্স এবং মেশিন লার্নিং। বর্তমানে তিনি বেইজিংয়ের একটি এ্যারোস্পেস কোম্পানিতে এয়ারক্রাফট অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন।

অনুষ্ঠানে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে তারিকুল ইসলাম বলেন, "এই অর্জন আমি উৎসর্গ করছি আমার সুপারভাইজার প্রফেসর সু ইউয়ান মিং, বাবা-মা, স্ত্রী, এবং দেশের সিনিয়র ভাই ও বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি।"

শিক্ষা জীবনের শুরু ও সাফল্য
তারিকুল ইসলাম তাজ রাণীনগর উপজেলার বেলোবাড়ি গ্রামে ১৯৯৮ সালের ১২ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মো. বুলেট হোসেন রাণীনগর আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী এবং মা মোছা. সুলতানা মোফতারুন বেগম একজন শিক্ষিকা। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী তারিকুল ইসলাম ৫ম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছিলেন এবং পরে রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ২০১৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং ২০১৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

তিনি সাভার ল্যাবরেটরি কলেজে পড়াশুনা শেষ করার পর স্কলারশীপ পেয়ে চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য চলে যান।

দেশ ও জাতির গর্ব
তারিকুল ইসলামের এই অসামান্য সাফল্যে তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং এলাকাবাসী গর্বিত। তার পরিবারের সদস্যরা তার এই অর্জনে আনন্দিত ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা আল্লাহ তাআলার কাছে তার ভবিষ্যত কর্মজীবন সফল ও সার্থক হওয়ার জন্য দোয়া করেছেন।

উপরে