সড়কে কাঁচা মরিচ ফেলে প্রতিবাদ: আদমদীঘিতে চাষীদের মহাসড়ক অবরোধ, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সড়কে কাঁচা মরিচ ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করেছে মরিচ চাষীরা। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকাল সোয়া ৭টায় উপজেলার মরিচ বাজারে প্রায় আধা ঘণ্টা ব্যাপী চলা এই অবরোধে সড়কের দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে, ফলে প্রায় দুই কিলোমিটার মহাসড়ক অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা কাঁচা মরিচ উৎপাদনে প্রসিদ্ধ। এই অঞ্চলের মরিচ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। তবে চলতি মৌসুমে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে মরিচের দাম অনেক কমে গেছে। গত বছর প্রতি কেজি মরিচ ২০০ টাকা বিক্রি হলেও, এই মৌসুমে তা ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিলেন চাষীরা। তবে, গত সোমবার থেকে কিছুটা দাম বৃদ্ধি পেয়ে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকা কেজিতে।
এদিকে, ১ জুলাই মঙ্গলবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে আদমদীঘি সদর হাটে মরিচের ব্যাপক আমদানি হয়। কিন্তু ব্যবসায়ী পাইকাররা এসে মরিচ না কিনে, চুপচাপ বসে থাকার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকে। এতে চাষীরা বুঝতে পারে, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কম দামে মরিচ কিনতে চাচ্ছে। ফলে তারা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে এবং বস্তা বস্তা কাঁচা মরিচ সড়কে ফেলে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
বিক্ষোভকারীরা ৩০ মিনিটের জন্য মহাসড়ক অবরোধ করে, যার ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহন আটকে যায়। অবরোধ চলাকালে, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চাষীদের সাথে আলোচনা করেন এবং অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
মরিচ ব্যবসায়ী বাচ্চু হোসেন জানান, "আমরা প্রতি দিনের মতো মরিচ কিনতে বাজারে এসেছিলাম, কিন্তু চাষীরা মরিচ বিক্রি না করার জন্য বিক্ষোভ শুরু করায়, আমরা মরিচ কিনে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।"
মরিচ চাষী জামাল হোসেন, মোয়াজ্জিম হোসেন এবং সাইদুল হোসেন জানান, "গতকাল থেকে মরিচের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের দাম না দিয়ে কম দাম দেয়ার চেষ্টা করছিল। এর ফলে আমাদের লোকসান হচ্ছে, তাই আমরা এই প্রতিবাদ করি।"
চাষীদের দাবি, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তারা তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবেন।