গাইবান্ধায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ, তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের সাকোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা মশকুর আলমের বিরুদ্ধে একাধিক নারী কেলেঙ্কারি, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২ জুন তিনি বিদ্যালয়টিতে যোগদানের পর থেকে একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক মোস্তফা মশকুর আলমের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, এবং বিদ্যালয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা আরও জানান, তিনি তিনবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও বর্তমানে কোনো স্ত্রী তাঁর সঙ্গে নেই। পরকীয়া সম্পর্কের জেরে তাঁর সংসার ভেঙেছে একাধিকবার। এছাড়া নারীঘটিত নানা ঘটনায় ধরা পড়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মীমাংসাও হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, প্রধান শিক্ষকের বাড়ি বিদ্যালয়ের সন্নিকটে হওয়ায় তিনি এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন এবং একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে সন্ত্রাসী চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করছেন। এতে বিদ্যালয়ের পাঠদান ও শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও এই পরিস্থিতিতে চরম উদ্বিগ্ন।
এই পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে গত ২০ জুলাই ২০২৫ তারিখে পলাশবাড়ী উপজেলা শিক্ষা অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে ২৮ জুলাই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, ফেরদৌসী বেগম ও তাহেরা নাসরিন। তদন্তের সময় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না।
তদন্ত শেষে মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, “তদন্ত চলমান রয়েছে। আমরা স্থানীয়দের বক্তব্য নিচ্ছি এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেব। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী প্রমাণিত হলে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগ গোপন বা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।