বীরগঞ্জে গভীর রাতে নৃশংস হত্যাকাণ্ড
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে দানিউল ইসলাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সাতোর ইউনিয়নের আরাজি চৌপুকুরিয়া গ্রামের জিন্দাপীর মেলা সংলগ্ন এলাকায় তার নিজ শয়ন কক্ষ থেকে গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত দানিউল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশাগত কারণে দিনাজপুর শহরে পরিবারসহ বসবাস করতেন। তার ছেলে সামিল ইসলাম দিনাজপুরে এবং মেয়ে দৃষ্টি স্বামীর বাড়িতে থাকেন। দানিউল ইসলাম মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়িতে এসে সপ্তাহে দু’একদিন রাত্রিযাপন করতেন। গত শুক্রবার তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন কাজের লোক রফিকুল ইসলাম ও নুর জাহান বেগম। শুক্রবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে দানিউল ইসলাম তার শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। শনিবার সকালে শয়ন কক্ষের দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হলে রফিকুল ইসলাম সেখানে গিয়ে বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় দানিউল ইসলামের মরদেহ দেখতে পান। পরে তিনি ডাকচিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে এবং পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর নিহতের চাচা ও তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন আলী রাঙা একইভাবে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। এ কারণে ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সাতোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন রাজা এবং নিহতের স্বজনেরা গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল) শাওন কুমার। এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও তদন্ত শেষে হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ সর্বাত্মকভাবে কাজ করছে।
তিনি আরও জানান, খুব দ্রুতই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
