খাদ্য উৎপাদনকারী এবং ডিম ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে পোল্ট্রি খাত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে | Daily Chandni Bazar খাদ্য উৎপাদনকারী এবং ডিম ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে পোল্ট্রি খাত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৩ জুলাই, ২০২৫ ০০:২৩
খাদ্য উৎপাদনকারী এবং ডিম ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে পোল্ট্রি খাত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
ইয়ামিন হোসেন, আটঘরিয়া, পাবনাঃ

খাদ্য উৎপাদনকারী এবং ডিম ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে পোল্ট্রি খাত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

খামারের লেয়ার মুরগি। ছবি- সংবাদদাতা

পোল্ট্রি শিল্পে বর্তমানে অস্বাভাবিক খাদ্য মূল্য বৃদ্ধি এবং ডিমের দাম কমে যাওয়ার কারণে খামারিরা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। বিশেষ করে আটঘরিয়া উপজেলার ছোট-বড় প্রায় ৩০০টি পোল্ট্রি খামার এখন বন্ধ হওয়ার পথে। খামারিরা অভিযোগ করছেন, খাদ্য উৎপাদনকারী এবং ডিম ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে পোল্ট্রি খাত সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে এবং ব্যাংক ঋণ ও খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন খামারিরা।

এখন প্রতিটি ডিম উৎপাদনের খরচ ১০ টাকা ২০ পয়সা হলেও, বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮ টাকা ১০ পয়সায়। একদিকে খাদ্য বিক্রেতাদের পাওনা এবং অন্যদিকে ব্যাংক ঋণের চাপ, যা খামারিদেরকে ব্যাপক হতাশায় ফেলেছে। অনেক খামারি তো খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

তিন হাজার লেয়ার মুরগির খামারী আব্দুল লতিফ বলেন, "প্রতিদিন ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছেএবং মুরগির অস্বাভাবিক খাদ্য মূল্য এবং একদিনের বাচ্চার দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে খামার চালানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। খরচের সঙ্গে বিদ্যুৎ, ঔষধ ও কর্মচারী খরচ যোগ হয়ে লোকসান আরও বাড়ছে।"

অন্যদিকে, ১৫ শত মুরগির খামারী দুলাল জানায়, "ডিমের দাম না বাড়লে এবং খাদ্যের দাম কমলে খামার বন্ধ করে দেওয়ার ছাড়া উপায় নেই। প্রতিদিন ২ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও ডিমের মূল্য হ্রাস হওয়ায় খামার চালানো সম্ভব নয়।"

মিয়াপাড়ার লেয়ার মুরগির খামারী আফজাল জানাচ্ছেন, "যদি জানতাম যে এত বড় লোকসান হবে, তাহলে কখনো মুরগির খামার শুরু করতাম না। এখন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি, এবং বেকারই থেকে যাচ্ছি।"

পশু সম্পদ অফিসের এক মাঠকর্মী জানায়, "এখানে প্রায় ৩০০টি খামার রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে লোকসান দেয়ার কারণে খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন। এর ফলে শতশত মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।"

বিশেষজ্ঞদের মতামত:
পোল্ট্রি খাতের সংকটের মূল কারণ খাদ্য উৎপাদনকারী ও ডিম ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। তাদের সিন্ডিকেটের কারণে খামারিদের অসহনীয় চাপ এবং পোল্ট্রি শিল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সচেতন মহল বলছে, এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে পোল্ট্রি খাত একসময় ধ্বংসের দিকে চলে যাবে।

স্থানীয়রা দাবি করেছেন, সরকারের উচিত পোল্ট্রি খামারি ও খাদ্য উৎপাদনকারীদের মধ্যে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার মাধ্যমে বাজারে স্থিতিশীলতা আনা, যেন খামারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং এ খাতের বিকাশ সম্ভব হয়।