
রংপুর নগরীতে সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ছোট ছেলের উপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় ন্যায় বিচারের দাবিতে আহাজারি করেছেন এক অসহায় মা। বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে নগরীর ২০ নং ওয়ার্ডের গুড়াতিপাড় কবরস্থান গলির নিজ বাসভবনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযুক্ত বড় ছেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন ৬৫ বছর বয়সী মোছাঃ জিন্নাত রহমান।
তিনি জানান, তাঁর স্বামী মৃত মতিয়ার রহমান দুই পুত্রসন্তান রেখে গেছেন—বড় ছেলে মোঃ জাভিদ ইকবাল লিমন (৪৭) এবং ছোট ছেলে মোঃ জাকির ইকবাল লিখন (৩৭)। দুই ভাই একই ভবনে আলাদা ফ্ল্যাটে বসবাস করলেও, সম্পত্তির লোভে বড় ছেলে দীর্ঘদিন ধরে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে শত্রুতা ও ঝগড়া করে আসছিলেন।
জিন্নাত রহমান জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে বড় ছেলে জাভিদ ইকবাল লিমন ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের (২-৩ জন অজ্ঞাতনামা) সঙ্গে নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছোট ছেলের বাসায় হামলা চালান। ধারালো কুড়াল দিয়ে ছোট ছেলে ও তার স্ত্রী মনিরা বেগমকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। এ সময় ঘরের আসবাবপত্র, দরজা-জানালা ভাঙচুরসহ আলমারি ভেঙে নগদ টাকা ও সোনার গহনা লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন জিন্নাত রহমান।
স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ওইদিনই রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় মোছাঃ জিন্নাত রহমান বাদী হয়ে বড় ছেলে জাভিদ ইকবাল লিমন, তার স্ত্রী মোছাঃ শিউলি বেগম ও আরও দু’জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
কিন্তু ঘটনার এখানেই শেষ হয়নি। অভিযোগ অনুযায়ী, আবারো গতকাল (২ জুলাই) সকালে জাভিদ ইকবাল লিমন ও তার লোকজন বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক আরও মালপত্র নিয়ে যান।
আহতদের পরিবার এখনও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। জিন্নাত রহমান প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,
“আমি একজন মা, আমার বুকের ধনকে ওরা কুপিয়ে শেষ করে দিতে চেয়েছে। আমি ন্যায় বিচার চাই, আমার সন্তানদের নিরাপত্তা চাই।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ ধরনের ঘটনায় বারবার পুলিশের হস্তক্ষেপ চেয়েও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। তারা দ্রুত জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ ও পরিবারটিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানার বক্তব্য পেতে চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।