
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের কিশামত হাবু দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসায় পরীক্ষা চলাকালে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে কিশোর গ্যাং স্টাইলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাদ্রাসার পরিত্যক্ত টয়লেটে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীর নাম শাওন (১৬)। বর্তমানে সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার চলমান পরীক্ষার সময় শাওন টয়লেটে গেলে একই মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী গালিব, মুহিবুর রহমান, আল-আমিন, ইমন, মারুফ ও নাজির তাকে অনুসরণ করে টয়লেটের ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে। পরে তারা শাওনের গলায় চেইন পেঁচিয়ে, লোহার রড, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে।
চিৎকার শুনে এক সহপাঠী টয়লেটের কাছে গেলে তাকেও মারধর করে ও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় হামলাকারীরা। পরে কয়েকজন শিক্ষক ও স্থানীয়রা এসে শাওনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত কিশোররা আগে থেকেই উশৃঙ্খল আচরণে জড়িত এবং বিভিন্ন সময় সহপাঠীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল। পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর সময় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সেগুলো প্রকাশ না করে অভ্যন্তরীণভাবে মীমাংসা করায় এই ধরনের গুরুতর হামলার সাহস পেয়েছে তারা।
মাদ্রাসার সুপার বলেন, “ঘটনার পরপরই অভিযুক্তদের অফিস রুমে আটকে রাখা হয় এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি জানানো হয়।”
তবে অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগ না থাকার অজুহাতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে অভিযুক্তদের পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় শহিদুল ইসলাম বলেন, “ওরা আগে থেকেই ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। এবার তো মনে হলো ওকে মেরেই ফেলত। এরা কিশোর গ্যাংয়ের মতোই আচরণ করছে।”
এ ঘটনার তদন্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের পরিবার।