বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় একটি গৃহপালিত বিড়ালকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য এমরান হোসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মোস্তাফিজুর রহমান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে উপজেলার দত্তবাড়ীয়া গুচ্ছগ্রামে বুলবুলি (২৬) নামের এক নারী একটি সাদা-কালো রঙের পুরুষ বিড়ালকে গলা কেটে হত্যা করেন। ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন স্থানীয় এক নারী। তিনি বিড়ালের মৃতদেহ সংগ্রহ করে বরফে সংরক্ষণ করে রাখেন, যাতে আইনগত পদক্ষেপের সময় প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যায়।
ঘটনার পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিন্দার ঝড় তোলে। ভিডিও ও পোস্টে অনেকেই এ ধরনের নৃশংস ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আদনান আজাদ বলেন—
“ঘটনার ভিডিও ও তথ্য যাচাই করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। যেকোনো বন্য বা গৃহপালিত প্রাণী হত্যা বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রাণীর প্রতি অমানবিক আচরণ সমাজে সহিংসতা ও নিষ্ঠুরতা বাড়ায়।”
এদিকে অভিযুক্ত নারী বুলবুলির একটি স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে তিনি বলেন,
“বিড়ালটি নিয়মিত মাছ-গোশত ও তরকারি চুরি করত। রাগের মাথায় মাঠ থেকে ধরে এনে আমি ওকে মেরে ফেলেছি।”
ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন—
“ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। উদ্ধার করা বিড়ালের মৃতদেহ ঢাকায় ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তদন্ত ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, প্রাণী হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
স্থানীয়রা বলছেন, এ ঘটনায় আইনগত দৃষ্টান্ত স্থাপন হলে ভবিষ্যতে কেউ প্রাণীর প্রতি এমন নিষ্ঠুরতা করতে সাহস পাবে না।