ভারতের উত্তরপ্রদেশের হার্দৌই জেলার এক কৃষক যা করেছেন, তা শুনে অনেকেই অবাক হয়েছেন। সাপের কামড়ে আহত হয়ে সাধারণ মানুষ যেখানে আতঙ্কে প্রাণ হারায়, সেখানে এক কৃষক রাগে উল্টো সাপকেই কামড়ে মেরে ফেলেছেন! ঘটনাটি ঘটেছে জেলার পুষ্পাতলি গ্রামে, আর এই অদ্ভুত কাণ্ড এখন সারা গ্রামজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৮ বছর বয়সী কৃষক পুণিত গত ৪ নভেম্বর ধানক্ষেতে কাজ করছিলেন। হঠাৎ করে একটি কালো কোবরা সাপ তার পায়ে জড়িয়ে ধরে এবং মুহূর্তের মধ্যে কামড় দেয়। কিন্তু পুণিত ভয় না পেয়ে উল্টো সাপটিকে ধরে তার মাথায় দাঁত বসিয়ে দেন!
স্থানীয়দের ভাষ্য, পুণিতের এই প্রতিক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণ আকস্মিক। কেউ কেউ বলেন, সাপের আক্রমণে ব্যথা পেয়ে রাগে তিনি এই কাজ করেন। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য—সাপটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়, আর পুণিত তখনও পুরোপুরি সচেতন ছিলেন।
পরে গ্রামের লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হার্দৌই মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে অ্যান্টি-ভেনম ইনজেকশন দেন এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন।
চিকিৎসক ডা. শের সিং বলেন,
“রাতে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। আমরা অ্যান্টি-ভেনম প্রয়োগ করেছি এবং পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। সৌভাগ্যবশত তার রিপোর্ট স্বাভাবিক আসে। পরদিনই তাকে ছাড়া হয়।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন,
“সাপকে কামড়ানো অত্যন্ত বিপজ্জনক কাজ। সামান্য বিষ মুখ বা মাড়ির ভেতর প্রবেশ করলে সে বেঁচে যেত না। কেউ যেন কখনো এমন কাজ অনুকরণ না করে।”
পুণিতের চাচাতো ভাই অমন কুমার জানান,
“প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম, সে মজা করছে। কিন্তু মাঠে গিয়ে দেখি সত্যিই সাপটি মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর থেকেই গ্রামজুড়ে সবাই এই ঘটনাই আলোচনা করছে।”
চিকিৎসকদের মতে, গ্রামীণ এলাকাগুলোতে সাপে কামড়ানোর ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। প্রতিবছর ভারতে প্রায় ৪৬ হাজার মানুষ সাপের কামড়ে প্রাণ হারান। তাই সাপে কামড়ালে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়াই একমাত্র উপায়, অদ্ভুত সাহস দেখানো নয়।
পুণিত এখন পুরোপুরি সুস্থ। তবে ঘটনার পর তিনি নিজেই বলেন,
“আমি জানি না, তখন কী ভেবে এমন করেছিলাম। হয়তো রাগে বা ভয়ে করেছি। এখন বুঝি, এটা খুবই বোকামি ছিল। আমি ভাগ্যবান যে বেঁচে গেছি।”