সুদানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় শান্তিরক্ষী নিহত
আফ্রিকার দেশ সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও আটজন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর [আইএসপিআর] শনিবার রাতে এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আইএসপিআর জানায়, সুদানের আবেই এলাকায় অবস্থিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মোট ১৪ জন শান্তিরক্ষী হতাহত হন। এর মধ্যে ছয়জন নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জানানো হয়, হামলার পর ওই এলাকায় পরিস্থিতি এখনো অস্থিতিশীল রয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের সঙ্গে শান্তিরক্ষীদের সংঘর্ষ চলমান। আহত শান্তিরক্ষীদের উদ্ধারে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সেনাবাহিনী জানায়, পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া সাপেক্ষে তা গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
আইএসপিআরের তথ্যমতে, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেই [UNISFA]-তে বাংলাদেশের একটি ব্যাটালিয়ন দায়িত্ব পালন করছে।
আবেই অঞ্চলটি সুদান ও দক্ষিণ সুদান যৌথভাবে পরিচালনা করে। অঞ্চলটির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতার পর ২০১১ সাল থেকে এ বিরোধের কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। অঞ্চলটি তেলসমৃদ্ধ হলেও এখানে সংঘাতের মূল কারণ অর্থনৈতিক নয়, বরং জাতিগত দ্বন্দ্ব।
জাতিসংঘের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বান
এদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে সুদানে জাতিসংঘের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।
প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
